লিপস্টিক খুবই জনপ্রিয় একটি মেকআপ আইটেম যা মুহূর্তেই মধ্যেই আপনার ব্যাক্তিত্ব ও মুড এর পরিবর্তন ও প্রকাশ করতে পারে। একটু লিপ কালাই আপনার সাধারণ লুককে করে তোলে আরও আকর্ষণীয়। কলেজ, অফিস, ডেট, বা উইকেন্ড আউটিং বা যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠান, প্রত্যেকটির জন্য আলাদা আলাদা পছন্দের শেড রয়েছে।
তবে আমাদের আজকের ব্লগ অন্য কিছু নিয়ে, যদি আপনার বাজেট সীমিত হয়ে থাকে তবে কি কইরবেন কি কি দিক মাথায় রাখবেন সব কিছু নিয়ে কথা হবে। প্রশ্ন হলো কোন ব্রান্ডের লিপস্টিক ভালো? আমরা সবাই চাই দামে কম মানে ভালো, শুন্দর শেড সাথে দীর্ঘস্থায়ী রঙ ও আরামদায়ক টেক্সচার।
আপনার জন্য ভালো খবর হলো আমরা খুঁজে নিয়ে এসেছি কিছু ৫০০ টাকার নিচে অসাধারণ ও সেরা লিপস্টিক ব্র্যান্ডস ইন বাংলাদেশ। এটি বাজেট লিপস্টিক বাংলাদেশ খুঁজছেন এমন কাউকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে বড় সহায়তা করবে।
কেন বাজেট লিপস্টিক এখন এত জনপ্রিয়?
বাংলাদেশে বিউটি মার্কেট গত কয়েক বছরে ব্যাপকভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আগে যেখানে উচ্চমূল্যের বিদেশী লিপস্টিক জনপ্রিয় ছিল, এখন স্থানীয় ও এশিয়ান বাজেট-ফ্রেন্ডলি লিপস্টিক ব্র্যান্ড গুলো জায়গা করে নিয়েছে।
বাজেট লিপস্টিক এখন এত জনপ্রিয় হবার পিছনে কিছু কারণও রয়েছে যেমন কম দামেও ভালো মানের পন্য পাওয়া যায়। সাথে এগুলো নিত্যদিনের ব্যবহারযোগ্য। নানান শেডে থাকায় মুড ও অনুষ্ঠান উপযোগী শেড ও পাওয়া যায়। সাথে এসব এর দাম ছাত্রছাত্রী ও তরুণ-তরুণীদের নাগালের মধ্যে তা তারা সহজে অনলাইনে বা অফলাইনে কিনতে পারবেন।
দাম কম বলেই যে পন্যের মান খারাপ ধারণাটা কিন্তু ভুল। অনেক সাশ্রইয়ী লিপস্টিক এখন এমন লং-লাস্টিং ফর্মুলা ও সুন্দর শেড দেয় যে লোকজন আবার কিনতে চান! বাজেট-ফ্রেন্ডলি ব্র্যান্ডগুলো বাংলাদেশি আবহাওয়া – গরম, আর্দ্রতা, ধুলোবালি এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে ফর্মুলা তৈরি করছে, তাই এগুলো ব্যবহারে আরাম পাওয়া যায়।
৫টি সেরা লিপস্টিক ব্র্যান্ডস ইন বাংলাদেশ
আজকাল বাজারে অনেক লিপস্টিক ব্রান্ডের নাম দেখা যায়, তবে সব ব্র্যান্ডের মান এক নয়। আমরা সহজেই পাওয়া যাবে এমন কিছু ব্র্যান্ড উল্লেখ করছি যা আপনি খুব সহজেই Beauty Booth Bangladesh থেকে পেয়ে যাবেন।

Pink Flash
বেজেটের মধ্যে সেরা লিপস্টিক খুঁজলে সবার আগে নাম আসবে Pink Flash এর। কারণ এর ফর্মুলা খুবই স্মুথ এবং সাথে খুবই হালকা টেক্সচার এর। এই ব্র্যান্ডের ফিনিশ খুবই হালকা সাথে ম্যাট। লিপস্টিক গুলোর পিগমেন্টেশনও দারুণ। সাথে এর অনেক প্রকার শেড থাকার কারণে যেকনো অনুষ্ঠানের জন্য ভালো রঙ বাঁচাই করা সহজ হয়।
Anafeli
Anafeli এই ব্র্যান্ডটি বাংলাদেশের বিউটি বাজারে দিন দিন অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এই ব্র্যান্ডের সবচেয়ে শক্তিশালী দিক হলো এটি খুব সহজে আপনার ঠোঁটে থেকে যায়, কোনো কেকি অনুভূতি দেয় না। এই লিপস্টিক ঠোঁটে অনেক্ষন থাকে যা সাথে আরামদায়কও। যারা সফট ফিনিশ এর সাথে হয়েক রকম শেড থেকে পছন্দ করতে চান তাদের জন্য খুব ভালো একটি ব্র্যান্ড।
Baby Bright
Baby Bright থাইল্যান্ডের খুবই জনপ্রিয় একটি ব্র্যান্ড, যা বাজেট এর মধ্যে থাকার সাথে সাথে বিউটি সমাধান দেয়। এর বহুমুখী শেড সাথে ট্রেন্ডি কালেকশন হবার কারণে এটি বাংলাদেশি তরুনীদের কাছে খুব জনপ্রিয় একটি নাম। এই ব্র্যান্ডের পিঙ্ক শেড গুলো খুবই জনপ্রিয়, যা বাংলাদেশের স্কিন টোনের জন্য পারফেক্ট ফিট।
Dorea
Dorea একটা বাজেট ফ্রেন্ডলি ব্র্যান্ড যা বাংলাদেশি মার্কেটে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। লং লাস্টিং ম্যাট ফিনিস এর সাথে অনেক সহজলভ্য হবার কারণে এটি খুব দ্রুত সবার মুখে মুখে এসে পড়েছে। যারা একটু statement look পছন্দ করেন, লাল, burgundy, plum, deep brown type shades, তাদের জন্য Dorea ভালো অপশন, কারণ এর রঙ দ্রুত ফুটে ওঠে এবং long-lasting।
La Femme
La Femme বাংলাদেশে অনেকদিন ধরে পরিচিত একটি সাশ্রয়ী লিপস্টিক ব্র্যান্ডের নাম। রঙের ভ্যারাইটি ও budget-comfort এর জন্য এটি জনপ্রিয়। এর লিপস্টিক গুলো ক্রিমি ও সেমি ম্যাট ফিনিশ যা পিগমেন্টেশনও বেশ ভালো। এটি বিশেষভাবে আকর্ষণীয় কারণ দৈনিন্দিন লুকের জন্য বেশ আরামদায়ক।
Nior
Nior হচ্ছে বাংলাদেশি consumers-এর কাছে অত্যন্ত পরিচিত ও স্টাইলিশ একটি ব্র্যান্ড। Nior Lipstick-এর প্যাকেজিং, shade quality ও color payoff একে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে। Nior এর signature shades medium–deep BD skin tone-এ দারুণ মানায়—যেমন red, rose, mauve, berry tones। যারা classy bold matte finish খুঁজছেন, কিন্তু বাজেট ৫০০ টাকার মধ্যে রাখতে চান তাদের জন্য Nior অন্যতম ব্র্যান্ড।
কোন লিপস্টিকটি আপনার জন্য সেরা? (ত্বকের টোন অনুযায়ী পরামর্শ)
আমাদের ত্বকের টোনের সাথে শেড মিলিয়ে লিপস্টিক নিলে তা আমাদের চেহারার গ্লো বাড়ায়। মুখের টোনের সাথে অমিল রেখে ভুল শেড নিলে তা আমাদের মুখকে ডাল করে দেয়। তাই আমাদের স্কিন টোন বুঝে লিপস্টিক বেছে নেওয়াটা জরুরি।
ফর্সা টোন
ফেয়ার টোন বা ফর্সা স্কিন টোনে সফট পাস্টেল ( Soft pastel ) শেড বেশ ভালো মানায়। ফর্সা টোনের জন্য যেসব টোন মানাবে –
- নিউড পিংক (Nude Pink)
- রোজ (Rose)
- সফট ক্লোরাল (Soft Coral)
- পিচ (Peach)
মাঝারি / হালকা বাদামী রঙের ত্বকের রঙ
এটি ত্বকের টোন টি বাংলাদেশের সবচেয়ে সাধারণ টোন। এটি রঙ্গের ত্বক মোটামুটি সব শেড মানায়। তবে ওয়ার্ম টোন (Warm Tone) শেড এই ত্বকের রঙে বেশি ভালো লাগে।
আরও কিছু শেড যা এই ত্বকের সাথে খুব ভালো মানাবে –
- ব্রিক রেড (Brick Red)
- ক্লোরাল (Coral)
- Brown Nude (ব্রাউন নিউড)
হালকা কালচে রঙের ত্বকের রঙ
এই ধরণের ত্বকে টোনে ডিপ শেড বেশ ভালো লাগে। এই ত্বকের টোনের জন্য যেসব শেড বাঁচাই করবেন –
- বারগান্ডি (Burgundy)
- ওয়াইন (Wine)
- ডিপ ব্রাউন (Deep Brown)
- প্লাম (Plum)
লিপস্টিক কেনার সময় যেসব বিষয় মনে রাখবেন

সাশ্রয়ী লিপস্টিক যেকয়েকটা আমরা বলেছি, সেগুলো ছাড়াও বাজারে সাশ্রয়ী আরও কিছু ব্র্যান্ডের লিপস্টিক পাওয়া যায়। তবে মনে রাখবেন, সব লিপস্টিক ভালো নয় তাই লিপস্টিক কিনবার পূর্বে কিছু বিষয় মাথায় রাখবেন –
- কি কি ইনগ্রেডিয়েন্ট ব্যবহার করা হয়েছে লক্ষ্য করুন।
- কোন ফিনিশ খুঁজচ্ছেন তা বাঁচাই করুন। ম্যাট / ক্রিমি / সেমি ম্যাট।
- পিগমেন্টেশন চেক করুন, যেন কম ব্যবহারে উঠে না আসে।
- লং লাস্টিং কিনা দেখুন।
- শেড আপনার ত্বকের টোনের সাথে মিল হচ্ছে কিনা দেখুন।
- কিনবার আগে রিভিউ চেক করে নিন।
শীতে লিপস্টিক ব্যবহারের কিছু হ্যাক

শীতকালে আমাদের ঠোঁট খুব দ্রুত আর্দ্রতা হারায় ও শুকিয়ে যায়। ঠোঁট শুকিয়া যাবার কারণে লিপস্টিক ভালোভাবে বসেনা, ক্র্যাক করে। এই শীতে লিপস্টিক সবচেয়ে ভালোভাবে রাখার জন্য কিছু হ্যাঁক অনুসরণ করতে পারেন –
- সপ্তাহে একবার ঠোঁট স্ক্রাব করুন
সপ্তাহে ১ থেকে ২ বার স্ক্রাব করলে মরা চামড়া উঠে যায়, পরবর্তীতে লিপস্টিক ভালোভাবে বসতে পারে।
- লিপস্টিক এর সাথে লিপ বাম লাগান
শীতকালে লিপ বাম লাগানো একদম অবশ্যই একটি কাজ, লিপ বাম ঠোঁটের আর্দ্রতা ধরে রাখে।
- পুনরায় ব্যবহার
লিপস্টিক লেয়ার করে লাগালে অনেক্ষন এর জন্য লাস্টিং করে। সাথে কেকি অনুভূতিটাও থাকে না।
উপসংহার
স্টাইলিস লুক আনার জন্য এখন বেশি বাজেট এর দরকার নেই। ৫০০ টাকার মধ্যে এখন অনেক সেরা লিপস্টিক ব্র্যান্ড পাওয়া যায়। নিজের লাইফস্টাইল, বাজেট, ও সৌন্দর্যের সাথে মিল রেখে বাঁচাই করে নিন আপনার লিপস্টিক ব্র্যান্ড।



