কোরিয়ান টোনার vs বাংলাদেশি টোনার – পার্থক্য কি?

টোনার ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি

ত্বকের যত্নের কথা আসলে আমাদের মাথায় প্রথমে আসে ফেসওয়াশ, ময়েশ্চারাইজার বা সিরামের কথা। তবে একটি স্বাস্থ্যকর ত্বকের জন্য টোনার খুবই বড় ভূমিকা পালন করে। স্বাস্থ্যকর স্কিনকেয়ার রুটিন টোনার ছাড়া অসম্পূর্ণ। বিশেষ করে আমাদের বাংলাদেশি আবহাওয়ায়, যেখানে গরমে ত্বক তৈলাক্ত, শীতে শুষ্ক এবং বর্ষায় অতিরিক্ত আর্দ্রতা তৈরি হয়। এ অবস্থায় ত্বকের pH ব্যালান্স বজায় রাখা, পরবর্তী স্কিনকেয়ার শোষণ বাড়ানো ও ত্বক হাইড্রেট রাখা, সবই টোনারের প্রধান কাজ।

 

সম্প্রতি বাংলাদেশে ত্বকের যত্ন দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। আগে সাধারণ কিছু যত্নে হলেও এখন আমরা উপাদান, ত্বকের ধরন, pH ব্যালান্স, এসব বিষয় সম্পর্কে আরও সচেতন। ইদানীং আমরা সকলেই কোরিয়ান বিউটি বা কে-বিউটি (K-Beauty) এর নাম শুনেছেন, বর্তমানে বেশ ট্রেন্ডিং-এ রয়েছে। পুরো বিশ্বে কোরিয়ান বিউটি ত্বক সুরক্ষায় নতুন ধারণা এনে দিয়েছে। স্নেইল মিউসিন, সেন্টেলা এশিয়াটিকা, হায়ালুরোনিক অ্যাসিড, এসব উপাদান এখন আমাদের কাছে পরিচিত; মূলত কোরিয়ান বিউটি ট্রেন্ডের মাধ্যমেই।

 

এদিকে আমাদের বাংলাদেশি স্থানীয় ব্যান্ড ও কিন্তু থেমে নেই, সাশ্রয়ী, সহজলভ্য এবং অনেক ক্ষেত্রে ন্যাচারাল উপাদানভিত্তিক পণ্য সাধারণ ব্যবহারকারীর কাছে খুব দ্রুত গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। আমাদের আজকের ব্লগ এই দুটি উৎসের টোনারের মধ্যে মূল পার্থক্য নিয়ে। কারণ ভুল পণ্য নির্বাচন করলে ত্বকের উপকারের বদলে ক্ষতিই হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

কোরিয়ান টোনার vs বাংলাদেশি টোনার - পার্থক্য কি?

 

কোরিয়ান টোনার কীভাবে আলাদা?

আজ সারা বিশ্বে কোরিয়ান টোনার এত বেশি জনপ্রিয় হবার মূল কারণ হলো তাদের উচ্চ ও উন্নত মানের উপাদান যা ত্বকের বেরিয়ার সাপোর্ট করে এবং ত্বকে প্রচুর পরিমাণে হাইড্রেশন ও ময়েশ্চারাইজ প্রদান করে। 

কোরিয়ান টোনারের কিছু মূল বৈশিষ্ট্য হলো –

হাইড্রেশন সবার আগে

কোরিয়ান টোনার গুলো সাধারণত বেশি হাইড্রেটিং। এতে থাকা হায়ালুরোনিক অ্যাসিড, গ্লিসারিন, রাইস ওয়াটার ইত্যাদি উপাদান ত্বককে ভেতর থেকে পানি ধরে রাখতে সাহায্য করে। যা ত্বক শুষ্ক হওয়া থেকে বাঁচায় এবং ত্বককে রাখে উজ্জ্বল।

স্কিনকেয়ার লেয়ারিং এর জন্য বেশ সুবিধাজনক

কোরিয়ান বিউটি তে খুব জনপ্রিয় একটি ধারণা হলো “7 Step Method”। এই ৭ ধাপের মানে হলো টোনারের সাথে একাধিক লেয়ার লাগানো। এই কারোওনে কোরিয়ান টোনার খুবই বেশি ওয়াটারি ও হালকা টেক্সচার এর হয়।

Ph বেলেন্সড

কোরিয়ান টোনার গুলো ত্বকের pH 4.5–5.5 এর মধ্যে রেখে ব্যারিয়ার-কে সাপোর্ট করে। যা ত্বকের প্রাকৃতিক ব্যারিয়ার ঠিক রাখে, ত্বকের এই ব্যারিয়ার ভালো থাকলে ব্রণ, র‍্যাশ, দাগ দ্রুত কমে।

সমস্যা কেন্দ্রিক সমাধান

অনেক কোরিয়ান টোনার তৈরি করা হয় নিদিষ্ট সমস্যা সমাধান করার জন্য যেমন –

  • ব্রণ
  • পোর
  • টেক্সচার
  • ডিহাইড্রেশন
  • সান ড্যামেজ

কিছু কমন ন্যাচারাল কোরিয়ান উপাদান –

  • Snail mucin
  • Cica
  • Rice extract
  • Green tea
  • Mugwort

কোনোরকম অ্যালকোহল মুক্ত এবং ত্বকে আরামদায়ক

বেশিরভাগ কোরিয়ান টোনারে কোনোরকম অ্যালকোহল বা ত্বকে জ্বালা সৃষ্টি কারি উপাদান ব্যবহার করা হয় না। যার ফলে ত্বক খুব দ্রুত উজ্বলতা দেখা দেয় এবং ত্বকের স্বাস্থ্য আরও উন্নত হয়।

বাংলাদেশি টোনার – স্থানীয় ব্র্যান্ডের শক্তি ও সীমাবদ্ধতা

বাংলাদেশে তৈরি হওয়া টোনারগুলো সম্প্রতি স্কিনকেয়ার মার্কেটে ভালো অবস্থান নিচ্ছে। আমাদের দেশে তৈরি হওয়া টোনার গুলির দাম সাশ্রয়ী, সহজলভ্য, এবং অনেক ক্ষেত্রে ন্যাচারাল উপাদান দিয়ে তৈরি, যা স্থানীয় ত্বক এবং পরিবেশের সাথে বেশ মানানসই। 

তবে এসব পণ্যের কার্যকারীতা এবং সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন হওয়া খুবই জরুরি। কিছু বাংলাদেশি ব্র্যান্ড ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সফল, আবার কিছু কিছু ব্র্যান্ডে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে, তাই সঠিক তথ্য জানা থাকলে আপনার জন্য বাংলাদেশি টোনার বাঁচাই করাটা বেষ সহজ হবে। এই অংশে আমরা আলোচনা করবো বাংলাদেশি টোনারের শক্তি এবং সীমাবদ্ধতার উপর, যাতে আপনি জানেন কোন ধরনের টোনার আপনার ত্বকের জন্য সেরা –

বাংলাদেশি টোনার-এর শক্তিশালী দিক গুলো –

  • কোরিয়ান যেসম টোনার আমরা ব্যবহার করা থাকি, তার বেশিরভাগের-ই দাম অনেক বেশি হয়ে থাকে। এ দিক থেকে বাংলাদেশের টোনার গুলোর দাম সাধ্যের মধ্যে। কোরিয়ান প্রোডাক্টের তুলনায় দাম অনেক কম। 
  • দাম কমের সাথে সাথে বাংলাদেশের টোনার গুলো সহজলভ্যতা অনেক বেশি, অনলাইন-অফলাইন সব জায়গায় পাওয়া যায়। 
  • আমাদের দেশের টোনার গুলো আমাদের আবহাওয়ার জন্য বেশ কার্যকরী। 
  • কোরিয়ান-দের মতো আমাদের দেশীয় পণ্যগুলোও নিম, অ্যালোভেরা, গোলাপজল, গ্রিন টি ব্যবহার করে। 

যেসব সীমাবদ্ধতা রয়েছে

  • ফর্মুলেশন গুলো সাধারণ

কোরিয়ান টোনার গুলোর তুলনায় আমাদের টোনার গুলোর মধ্যে হাইড্রেটিং বা ব্যারিয়ার ঠিক করার জন্য অ্যাডভান্স ফর্মুলেশনগুলো তুলনামূলক কম। তবে অনেক বাংলাদেশি ব্যান্ড এখন নতুন নতুন আরও ফর্মুলেশন ব্যবহার করছ।

  • ব্যবহৃত ইনগ্রেডিয়েন্ট এর গুনমানে তফাৎ

সব ব্রান্ড তাদের পণ্যের মান একই রাখে না, অনেকেই তাদের পণ্য বাজারে ছাড়ার কিছু দিন পর মান হারিয়ে ফেলে।

  • প্রোডাক্টে অ্যালকোহল ও ফ্রেগ্রেন্স ব্যবহার

কিছু কিছু ব্যান্ডে অ্যালকোহল ও ফ্রেগ্রেন্স ব্যবহার বেশি হয়ে থাকে। এই কারণে সেনসিটিভ স্কিন এর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। মোট কথা বাংলাদেশি টোনার আমাদের বেসিক কেয়ার দিতে পারে, কিন্তু কোরিয়ান টোনার সুনির্দিষ্ট সমস্যা সমাধানে আরও কার্যকর।

কোরিয়ান টোনার বনাম বাংলাদেশি টোনার – পার্থক্য টেবিলে তুলনা

 

বিষয় কোরিয়ান টোনার বাংলাদেশি টোনার

ফোকাস

হাইড্রেশন + ট্রিটমেন্ট বেসিক রিফ্রেশিং

ফর্মুলেশন

অ্যাডভান্স সায়েন্স ব্যবহার

সাধারণ ফর্মুলেশন ব্যবহার

টেক্সচার

হালকা এবং ওয়াটারী

সাধারণ

pH Balance

হ্যাঁ

মিশ্র

ব্যরিয়ায় সাপোর্ট

অনেক ভালো কাজ করে

সীমাবদ্ধ কাজ করে

উপাদান

Snail, Cica, Rice

Rose, Neem, Aloe

ত্বক পরিবর্তনের ক্ষমতা

অনেক

মোটামুটি

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নেই

কিছুটা দেখা যেতে পারে

উপযোগিতা

অনেক উচ্চমানের

মিডিয়াম থেকে কম

লেয়ারিং

লেয়ারিং করা সহজ

সব প্রোডাক্ট এর সাথে লেয়ার করা যায় না

ট্রিটমেন্ট

খুবই ভালো ভাবে ট্রিটমেন্ট করে

কোরিয়ান টোনারের তুলনায় একটু কম

সহজলভ্যতা ইম্পোর্টেড এবং অনলাইন

সহজলভ্য

কোনটা আপনার জন্য সেরা হবে? (ত্বকের ধরণ অনুযায়ী পরামর্শ)

কোন টোনার আপনার জন্য সেরা হবে?
কোন টোনার আপনার জন্য সেরা হবে?

টোনার বাঁচাই করার পূর্বে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আপনার ত্বকের ধরন ও ত্বকের সমস্যা বুঝা। একটি টোনার ভালো কিনা তা শুধুমাত্র তার ব্র্যান্ড বা দামের ওপর নির্ভর করে না, বরং সেটি আপনার স্কিন টাইপে কাজ করছে কি না এটাই মূল কথা।

 

টোনার কোন স্কিন টাইপ ও পরিস্থিতিতে ভালো কাজ করে। আসুন স্কিন টাইপ অনুযায়ী বিস্তারিত দেখে নেয়া যাক –

Dry Skin (শুষ্ক ত্বক)

শুষ্ক ত্বক সাধারণত সবসময় টান্টান থাকে, রুক্ষ থাকে। এই ত্বকে আমাদের চেহারার ফাইন লাইন খুব বেশি দৃশ্যমান হয়ে উঠে। এই ধরনের ত্বক শীতে অনেক বেশি সমস্যা সম্মুখীন হতে হয়। শুষ্ক ত্বকের প্রধান সমস্যা হলো, ত্বকে পর্যাপ্ত আর্দ্রতা থাকে না। তাই এই ত্বকে টোনার ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য হলো গভীর হাইড্রেশন।

শুষ্ক ত্বকের জন্য এখন টোনার ব্যবহার করুন যাতে হাইড্রেশন ইনগ্রেডিয়েন্ট রয়েছে। আপনি কোরিয়ার টোনার গুলো ব্যবহার করতে পারেন, কারণ বেশির ভাগ কোরিয়ান টোনার হাইড্রেশন-ফোকাসড। এতে থাকা Hyaluronic acid, Snail mucin, Rice extract, Ceramide ত্বককে মইশ্চারাইজড রাখে ও আর্দ্রতা ধরে রাখে। 

 

Oily Skin (তৈলাক্ত ত্বক)

তৈলাক্ত ত্বকে নাক ও কপালে স্বাভাবিক থেকে বাড়তি তেল উৎপাদন হয়, যা ত্বকে ব্রণ উঠার কারণ। গরমে তৈলাক্ত ত্বকে অনেক বেশি সমস্যায় পড়তে হয়। তৈলাক্ত ত্বকে টোনার দুটি কাজ করে, এটি ত্বকে সিবাম ধরে রাখে সাথে খোলা বা ওপেন পোরস কে ছোট করে। 

তৈলাক্ত ত্বকের জন্য আপনি কোরিয়ান বা বাংলাদেশি দুই টোনার-ই ব্যবহার করতে পারেন। কোরিয়ান টোনার বেশি জেন্টাল ও ব্যালেন্সড, অন্যদিকে বাংলাদেশি টোনার গুলোর ফর্মুলা তুলনামূলক সাধারণ কিন্তু রিফ্রেশিং।

 

Combination Skin (মিশ্র ত্বক)

ত্বকের (T-Zone) তৈলাক্ত থাকে আবার গালের দিকে থাকে শুষ্ক, এই ধরনের ত্বককে মিশ্র ত্বক বলা হয়। মিশ্র ত্বকে ভারসাম্য অসম থাকে। এই ধরনের মিশ্র ত্বকের জন্য ব্যালেন্সড হাইড্রেশন খুব জরুরি। 

মিশ্র ত্বকের জন্য এমন টোনার ব্যবহার করতে হবে যা খুব ওয়েলি না, সাথে আবার খুব শুষ্কও না। এর জন্য ব্যবহার করতে পারেন কোরিয়ান টোনার যা সাধারণত ওয়াটারি ও হালকা টেক্সারের হয়ে থাকে। বাংলাদেশি টোনারে যদিও লাইট অপশন আছে, কিন্তু অ্যাাডভান্স হাইড্রেশন কম থাকে।

 

Sensitive Skin (সংবেদনশীল ত্বক)

সংবেদনশীল ত্বকে যেকোনো কিছু খুব বুঝে শুনে ব্যবহার করতে হয়। এ ধরনের ত্বকে র‍্যাশ, লালচে ভাব হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। যেকোনো নতুন পণ্য ব্যবহারের ক্ষেত্রে জ্বালাও হতে পারে। 

এই ত্বকের জন্য জেন্টাল ও কম জ্বালা-পোড়া করা প্রোডাক্ট ব্যবহার করা জরুরি। সংবেদনশীল ত্বকের জন্য কোরিয়ান টোনের সবথেকে ভালো কাজ করে। কারণ বেশির ভাগ কোরিয়ান টোনার-ই অ্যালকোহল ও গন্ধ মুক্ত। সাথে কোরিয়ান টোনার গুলোতে ব্যারিয়ায় রিপেয়ার করা ইনগ্রেডিয়েন্টস থাকে যেমন Cica, Panthenol, Ceramide)। 

আপনি চাইলে বাংলাদেশি টোনারও ব্যবহার করতে পারেন, তবে ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই ইনগ্রেডিয়েন্ট লিষ্ট চেক করে নিন। অ্যালকোহল না কোনোরকম ফ্রেগ্রেন্স থাকলে ব্যবহার করা যাবে না। 

টোনার ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি

যেকোনো প্রোডাক্ট সঠিক ভাবে ব্যবহার করা হলে তাঅ ফলাফল বেশি ভালোভাবে ফুটে উঠে।  আসুন সঠিকভাবে টোনার ব্যবহারের পদ্ধতি দেখে নেয়া যাক –

১ – আগে একটি ভালো ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ দুয়ে নিন।

২ – টোনারটি হাতে বা তুলোর প্যাডে লাগান।

৩ – আলতো চাপ দিয়ে চেহারায় লাগান।

৪ – ১ থেকে ২ মিনিট টোনার শুকাতে দিন।

৫ – টোনারের পর সিরাম বা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

আরও ভালো ফলাফলের জন্য টোনার কয়েক লেয়ারে ব্যবহার করুন, যাতে ত্বক গভীরভাবে হাইড্রেটেড হয়।

বিশেষজ্ঞের টিপস ও রেকমেন্ডেশন

  • অ্যালকোহল মুক্ত টোনার ব্যবহার করুন।
  • সংবেদনশীল ত্বক হলে গন্ধ বা ফ্রেগ্রেন্স-ফ্রি পণ্য ব্যবহার করুন।
  • এক্সফোলিইয়াটিং টোনার হলে একদিন পর পর ব্যবহার করুন।
  • সিরাম ব্যবহার কারার আগে টোনার ব্যবহার করুন।

 

শেষের কিছু কথা

বাংলাদেশি হোক কিংবা কোরিয়ান, দুটোরই নিজস্ব শক্তি ও ব্যবহারকারীর প্রয়োজন অনুযায়ী মূল্য আছে। কোরিয়ান টোনার তাদের যোগ্যতার জন্য বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। অন্যদিকে বাংলাদেশি টোনার সাশ্রয়ী, সহজলভ্য এবং বেসিক ত্বক পরিচর্যার ক্ষেত্রে কার্যকর। তাই আপনার ত্বকের ধরণ, বাজেট, ও লক্ষ্য দেখে সঠিক টোনার বাঁচাই করুন। সঠিক টোনার আপনার ত্বককে রাখে হেলদি, ব্যালান্সড ও গ্লোয়িং।

Index