একটি সুন্দর, সুস্থ, ও ন্যাচারাল স্কিন আমাদের সবার চাওয়া। আর এই হেলদি ত্বকের ট্রেন্ড কে আরও বেশি জনপ্রিয় করে তুলেছে (K-Beauty) স্কিনকেয়ার, অর্থাৎ কোরিয়ান স্কিনকেয়ার। গত কয়েক বছরে কোরিয়ান বিউটি অনেক বেশি জনপ্রিয়তা ও আগ্রহের সৃষ্টি করছে। আগে যেখানে বিদেশী স্কিন-কেয়ার মানেই পশ্চিমা বুঝাতো ব্র্যান্ড বুঝাতো এক্ষণ সে-জায়গা কোরিয়ান বিউটি প্রডাক্টস দখল করে নিয়েছে।
আমাদের আজকের এই ব্লগে আমরা কথা বলবো কোরিয়ান স্কিঙ্কেয়ার মানে কি? কেন এটি বাংলাদেশে এতো বেশি জনপ্রিয়, সাথে কোন কোন প্রডাক্ট খুব ভাইরাল এসকল প্রশ্নের উত্তর পাবেন আজকে।
কোরিয়ান স্কিন কেয়ার কি?
কোরিয়ান স্কিন কেয়ার বা K-Beauty হলো একটি স্কিন কেয়ার এর রুটিন যেখানে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয় যেন ত্বক ভিতর থেকে দীর্ঘমেয়াদ এর জন্য সুস্থ থাকে। কোরিয়ান স্কিনকেয়ার অনুযায়ী তারা বিশ্বাস করে, ত্বক সুন্দর, সুস্থ, এবং উজ্জ্বল রাখার জন্য ভিতর থেকে পরিচর্যা করা দরকার।
কোরিয়ান স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টস গুলো খুবই জেন্টাল এবং লাইটওয়েট হয় সাথে তাদের পণ্যে ব্যবহার করা উপাদান গুলো প্রাকৃতিক হবার কারণে ত্বকে জ্বালাপোড়া বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ও ভয় থাকে না।
এখানে মূল লক্ষ্য হলো – “পারফেক্ট স্কিন নয়, বরং স্বাস্থ্যকর স্কিন”
কোরিয়ান বিউটি প্রোডাক্টস এর মূল বৈশিষ্ট্য –
১) হাইড্রেশন ফোকাসড
কোরিয়ান বিউটি প্রোডাক্টস ত্বককে নরম ও পানিনির্ভর করে, যার ফলে ত্বক থাকে ফ্রেশ এবং উজ্জ্বল।
২) লেয়ারিং ধারণায় তৈরি
কোরিয়ান বিউটি জনপ্রিয় হবার পিছনে অন্যতম কারণ হলো, এর একাধিক হালকা হালকা স্কিনকেয়ার ব্যবহার করা। প্রতিটি লেয়ার ত্বকের ভিন্ন ভিন্ন কাজ করে। যার ফলে ত্বক ভিতর থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায়।
৩) জেন্টাল ফর্মুলা
কোরিয়ান বিউটি পন্যগুলো খুব দৃঢ়ভাবে ক্ষতিকারক যেকোনো উপাদান ব্যবহার থেকে দূরে থাকেন। কোনো হার্শ ক্যামিক্যাল নয় কোরিয়ান বিউটি প্রাকৃতিক উপাদান যেমন সিকা (Cica) , গ্রীন টি (Green Tea), স্নেইল মিউসিন (Snail Mucin), রাইস ওয়াটার (Rice Water) এগুলো বেশি ব্যবহার করে থাকে।
৪) প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ ভালো
কোরিয়ান খুবই প্রাচীন একটি স্কিনকেয়ার এর নীতি হলো – “সমস্যা হবার পরে প্রতিকার করার থেকে প্রতিরোধ করা ভালো”। তারা বিশ্বাস করে স্কিন ড্যামেজ হবার পরে ঠিক করার চেয়ে, আগেই ত্বককে সুরক্ষিত রাখা।
৫) স্কিন ব্যরিয়ার ঠিক করা সবার আগে প্রাধান্য
আমাদের ত্বকে স্কিন ব্যারিয়ার ঠিক থাকএলে ত্বক ব্রণ কম হয়, ত্বকের রুক্ষতা কম হয়, সাথে একটা উজ্জ্বল ভাব চলে আসে। তাদের প্রথম কথা হলো – “আগে ত্বক, পরে মেকআপ”
বাংলাদেশে কোরিয়ান স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টস কেন এত জনপ্রিয়?
বাংলাদেশি আবহাওয়া এবং ত্বকের সাথে কোরিয়ান স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টস বেশ মানানসই। এই কারণে কোরিয়ান স্কিনকেয়ার বাংলাদেশে অনেক দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
১) আবহাওয়া বান্ধব ফর্মুলেশন
বাংলাদেশের আবহাওয়া সাধারণত বেশ গরম, প্রচুর আর্দ্র, সাথে শহরের ধুলোবালি ও আছেই। একটা কথা মনে রাখা দরকার, ভারী রুটিন মানেই আরামদায়ক নয়। কোরিয়ান বিউটি প্রোডাক্টস গুলো খুবই হালকা টেক্সচার এর হাবার কারণে এটি ত্বকে খুব আরামদায়ক এবং সাথে বেশ উপযোগী।
২) জেন্টাল ইনগ্রেডিয়েন্টস তাই সেন্সিটিভ ত্বকের জন্য ভালো
বাংলাদেশি অনেকেরই ত্বক বেশ সংবেদনশীল, তাদের জন্য কোরিয়ান প্রোডাক্ট বেশ উপযোগী। তাদের পণ্যে সাধারণত অ্যাালকোহল কম থাকে, গন্ধ কিছু থাকে না, সাথে জ্বালা পোড়া এর ও কোনো সমস্যা নেই।
৩) হাইড্রেটিং সাথে ব্যারিয়্যার সাপোর্ট
আমাদের ত্বক শীতে অনেক বেশি শুষ্ক হয়ে পড়ে, অন্য দিকে আবার গরমে অনেক বেশি ডিহাইড্রেটেড হয়ে পড়ে। কে-বিউটি বাংলাদেশে পাওয়া যাওয়া পন্য গুলো বেশির ভাগই হাইড্রেশন লক্ষ্য করে যার ফলে ত্বক থাকে হাইড্রেটেড এবং প্রটেকটেড। এর টেক্সচার হালকা হবার কারণে এটি অনেকক্ষন যাবত ত্বকের ময়েশ্চার ধরে রাখে।
৪) ত্বকের সমস্যা কেদ্রিক সমাধান
কোরিয়ান বিউটি কেন জনপ্রিয়, এই প্রশ্নের উত্তর এটাই, তাদের প্রোডাক্ট গুলো ত্বকের সমস্যা ভিত্তিক সমাধান প্রদান করে। কে-বিউটি তে অধিকাংশ পন্যই সরাসরি সমাধান প্রদান করে। যেমন –
- অ্যাকনে বা ব্রণ
- ডার্ক স্পট
- পিগমেন্টেশন
- ডালনেস
- অতিরিক্ত তেল উৎপাদন
সকল সমস্যার জন্য কোরিয়ান পণ্য বেশ ভালো ও আশানুরূপ কাজ করে।
৫) ন্যাচারাল লুক
শুধু আমাদের দেশেরই নয়, অনেক মেয়েরা চান তাদের মেকআপে যেন কেকি ভাব না আসে। কোরিয়ান বিউটি পণ্যগুলো এটা খুব ভালো করে বুঝে। তাদের পণ্য গুলো প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা এবং গ্লাস স্কিন-এর জন্য খুবই ট্রেন্ডি।
৬) উদ্ভাবনী উপাদান
কে-বিউটি প্রোডাক্টস এর ব্যবহার করা উপাদান গুলো প্রাকৃতিক এবং বেশ কার্যকর। তারা বেশির ভাগ ব্যবহার করে সিকা (Cica), স্নেইল মিউসিন (Snail Mucin), রাইস ওয়াটার (Rice Water)। এসব উপাদান আগে এতো বেশি জনপ্রিয় ছিল না, কিন্তু আজ কোরিয়ান প্রোডাক্ট এর কারণে এগুলাও সারা বিশ্বে বেশ প্রচলিত।
৭) লেয়ারিং সুবিধা
কোরিয়ান বেশিরভাবগ পণ্যই একটার পরে আরকটা পণ্য যেন ব্যবহার করা যায় এভাবে তৈরি করা। এই লেয়ারিং রুটিন ধীরে ধীরে ত্বকে গভীর থেকে কাজ করে। যার কারণে ত্বক হাইড্রেটেড থাকে সাথে ত্বকে দাগ ও অন্যান্য সমস্যার দ্রুত সমাধান হয়।
8) ট্রেন্ডিং ও সোস্যাল মিডিয়ার প্রভাব
ইউটিউব, কে-ড্রামা, কে-পপ এর সোস্যাল মিডিয়ার প্রভাবে আজকাল কোরিয়ান স্কিনকেয়ার পন্য বেশ পরিচিত। কারন সবাই এ গ্লোয়িং স্কিন এর গোপন কারণ জানতে চায়।
বাংলাদেশে জনপ্রিয় কোরিয়ান স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টস
বাংলাদেশে অনেক প্রকার কোরিয়ান প্রোডাক্ট জনপ্রিয় হয়েছে, তা হলো –

টোনার
কোরিয়ান টোনার গুলো খুবই হাইড্রেটিং এবং হালকা টেক্সচার-এর যা ত্বককে খুব নরম উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত রাখে।
সিরাম
কোরিয়ান সিরাম গুলো বাংলাদেশে স্কিনকেয়ার প্রমিকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এতে কিছু উপকারী উপাদান যেমন ভিটামিন-সি, নিয়াসিনামাইড, স্নেইল মিউসিন (Snail Mucin) রয়েছে যা ত্বকে স্বাস্থ্যকর ও উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।
ময়েশ্চারাইজার
কে-বিউটি ময়েশ্চারাইজার গুলো জেল ক্রিম টাইপের হয়, সাথে এতে থাকে ইনগ্রেডিয়েন্ট গুলো ত্বকর স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় রাখে।
সানস্ক্রিন
সানস্ক্রিন আমাদের দৈনন্দিন স্কিনকেয়ার এর জন্য খুবই জরুরী একটি উপাদান। সানস্ক্রিন আমাদের অবশ্যই অবশ্যই ব্যবহার করা দরকার। এক্ষেত্রে কোরিয়ান সানস্ক্রিন গুলো অনেক বেশি জনপ্রিয় কেননা এগুলো কোনো গ্রিসি অনুভূতি দেয় না, কোনো সাদা-দাগ তৈরি করে না। সাথে ফিনিশিং টাও বেশ ভালো দেয়।
ক্লিনজিং ওয়েল ও ক্লিনজিং বাম
এগুলো আমাদের ত্বকের প্রতিদিনের ঘাম ধুলোবালি ও মেকআপ দূর করে। কোরিয়ান ক্লিনজিং ওয়েল ও ক্লিনজিং বাম ত্বকে গভীরভাবে ময়লা পরিষ্কার করে, সাথে পোরস দূর করে।
সিট মাস্ক
দ্রুত হাইড্রেশন ও উজ্জ্বল ত্বকের জন্য কোরিয়ান সিট মাস্ক গুলো খুব ভালো কাজ করে।
কোরিয়ান স্কিনকেয়ার রুটিন (স্টেপ-বাই-স্টেপ)
কোরিয়ান স্কিনকেয়ার রুটিন বা K-Beauty Routine ত্বক পরিচর্যার অন্যতম বৈজ্ঞানিক ও সাজানো পদ্ধতি।

কোরিয়ান স্কিনকেয়ার রুটিনের মূল উদ্দেশ্য –
- ত্বককে গভীর থেকে পুষ্টি দেয়া।
- প্রাকৃতিক সুরক্ষা ব্যরিয়ার শক্ত করে।
- ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে।
- দীর্ঘমেয়াদী সুস্থ ত্বক পাওয়া যায়।
আমরা অনেকেই ভুল ধারণাই থাকি যে, কোরিয়ান রুটিন মানেই ১০ ধাপ রুটিন! তবে কথাটি সত্য নয়। আপনার প্রয়োজন, বাজেট, আর ত্বকের ধরণ অনুযায়ী ধাপগুলো কম বেশ করা যায়।
নিচে সবচেয়ে কার্যকর ও প্র্যাক্টিক্যাল স্টেপ-বাই-স্টেপ Korean Skincare দেওয়া হলো –
Step-1: Oil Cleanser
আমাদের ত্বকে দৈনিক জমে থাকা –
- সানস্ক্রিন
- মেকআপ
- তেল
- দূষণ
এগুলো শুধু ক্লেনজার দিয়ে ঠিকমতো উঠে না, দরকার কোরিয়ান ওয়েল বেসড (Oil Based) ক্লিনজার যা পোরস এর ভিতর থেকে তেল-ময়লা তুলে আনে।
কেন ওয়েল ক্লিনজার প্রয়োজন?
- ত্বকের গভীরে পরিষ্কার করে
- ত্বকের ব্লাকহেড কমায়
- ত্বকের জ্বালাপোড়া কমায়
কোন স্কিন টাইপের জন্য ওয়েল ক্লিনজার ?
- ওয়েলি স্কিন
- অ্যাকনে প্রণ স্কিন
Step-2: Water Cleanser / Gel Cleanser
এই ধাপে মুখের ঘাম, ধুলো, এবং বাকি ময়লা পরিষ্কার করা হয়, কারণ ফ্রেশ স্কিন মানে ব্যালান্সড স্কিন। ডাবল ক্লিনজিং চেহারার গভীরে থাকা ময়লা দূর করে। এতে স্কিইন ফ্রেশ থাকে সাথে স্কিন ব্যারিয়ার ও নষ্ট হয় না।
Step-3: Toner
কে-বিউটি টোনার আমাদের ত্বককে তৈরি করতে খুব বেশি সাহায্য করে। কোনো কঠিন অ্যাস্ট্রিনজেন্ট নয় এটি একটি হাইড্রেটিং টোনার।
কেন টোনার প্রয়োজন?
- ত্বকের pH ব্যালেন্স ঠিক রাখে
- পোরস দূর করে
- ময়েশ্চার ধরে রাখে
কোন কোন ইনগ্রেডিয়েন্ট দেখে টোনার কিনবেন?
- রাইস ওয়াটার
- হায়ালুরনিক এসিড
- গ্রিন টি
- সিকা (Cica)
Step-4: Essence
এসেন্স হলো সিরামের মতো একটি হালকা পানি-ঘন প্রোডাক্ট, যা গভীরে হাইড্রেশন পৌঁছে দেয় এবং ত্বককে পরবর্তী ট্রিটমেন্ট এর জন্য তৈরি করে।
কেনো এসেন্স প্রয়োজন?
- ত্বকের গভীরে হাইড্রেশন প্রদান করে
- ক্ষত ত্বক ঠিক করে
- উজ্জ্বলতা বাড়ায়
Step-5: Serum
আমাদের ত্বকের প্রয়োজন ও সমস্যা অনুযায়ী বিভিন্ন সিরাম ব্যবহার করা হয়। কিছু জনপ্রিয় ইনগ্রেডিয়েন্ট বেসড সিরাম –
- ভিটামিন সি (Vitamin C) – ত্বকের উজ্জ্বলতা জন্য
- নিয়াসিনামাইড (Niacinamide) – পিগমেন্টেশন ও পোরস কমায়
- স্নেইল মিউসিন (Snail Mucin) – ত্বক মেরামত করে
- সিকা (Cica) – ত্বকের জ্বালাপোড়া কমায়
কেন সিরাম প্রয়োজন?
- এতে থাকা অ্যাাকটিভ ইনগ্রেডিয়েক্ট ডিপ লেয়ারে পুষ্টির যোগান দেয়
- পিগমেন্টেশন কমায়
- অ্যাকনে কমায়
- স্কিনের টেক্সচার ঠিক করে
Step-6: Moisturizer
ময়েশ্চারাইজার আমাদের ত্বকের সব হাইড্রেশন ধরে রাখে, স্কিন ব্যরিয়ার কে শক্ত করে সাথে পানি ধরে রাখে।
কোরিয়ান ময়েশ্চারাইজার এর ধরণ
- জেল টাইপ
- হালকা ওয়াটার ক্রিম
- ক্রিম
Step-7: Sunscreen
কোরিয়ান বিউটির সবচেয়ে বেশি জরুরী অংশ হলো সানস্ক্রিন, কারণ সূর্য্যের ক্ষতিকারক UV ray ত্বকের অকাল বার্ধক্য প্রকাশ করা শুরু করে, ও পিগমেন্টেশন কমায়।
কোরিয়ান প্রোডাক্টস ব্যবহারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
কে-বিউটি ত্বকে ভালো কাজ করে, তবে সঠিক পদ্ধতিতে ব্যবহার না করলে ফল নাও মিলতে পারে। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস দেয়া হলো –

১ ) নিজের ত্বক বুঝে পণ্য ব্যবহার
ওয়েলি, ড্রাই, মিশ্র, এবং সংবেদনশীল ত্বকের জন্য প্রোডাক্ট চেক করে নিন। ভুল পণ্য ব্যবহারে ত্বকের লাভ থেকে ক্ষতিই বেশি হবে।
২) অবশ্যই প্যাঁচ টেষ্ট করে নিন
নতুন কোনো প্রোডাক্ট ব্যবহার করার আগে, হাতে বা চোয়ালের ত্বকে প্যাঁচ টেষ্ট করুন। যদি সংবেদনশীল ত্বক হয়ে থাকে তবে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে বুঝে যাবেন। বিশেষ করে ভিটামিন-সি, রেটিলন, AHAs/BHAs ব্যবহার করার সময়।
৩) রুটিনে ধীরে ধীরে প্রোডাক্ট যুক্ত করুন
একসাথে হঠাৎ করে কয়েকটা নতুন প্রোডাক্ট যুক্ত করবেন না, স্কিন কনফিউজড হয়ে যায় এবং জ্বালাপোড়া বৃদ্ধি পায়। এভাবে শুরু করুন –
- প্রথম সপ্তাহে – টোনার
- দ্বিতীয় সপ্তাহে – সিরাম
- তৃতীয় সপ্তাহে – নতুন সিরাম বা ক্রিম
৪) অতিরিক্ত লেয়ারিং এড়িয়ে চলুন
স্কিনকেয়ারে বেশি লেয়ারিং করা হলে এতে পোরস বন্ধ হয়ে যায়, এবং ব্রেকআউট বেড়ে যায়। তাই স্কিনের ক্ষতি অনুযায়ী ও হিসেব করে লেয়ারিং কম বেশি করুন।
৫) সানস্ক্রিন
আমাদের সকলেরই সানস্ক্রিন ব্যবহার করা দরকার, তবে আপনি যদি কে-বিউটি অ্যাাসিড বা কোনো অ্যাকটিভ ব্যবহার করলে এসপিএফ (SPF) ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক। না লাগালে পিগমেন্টেশন বাড়তে পারে।
৬) ধারাবাহিকতা গুরুত্বপূর্ণ
কোরিয়ান বিউটির দ্রুত কাজ করে না, তবে ধারাবাহিকতা ধরে রাখলে ধীরে ধীরে ফলাফল দেখা যায়।
৭) বুঝে শুনে ইনগ্রেডিয়েন্ট বাঁচাই করুন
- নিস্তেজ ত্বকের জন্য – ভিটামিন সি
- অ্যাকনে সমস্যার জন্য – ট্রি ট্রি অয়েল / BHA / সিকা
- রেডনেস সমস্যা – সিকা
- ড্রাইনেস এর জন্য – সেরামাইড + হায়ালুরোনিক অ্যাসিড
- পিগমেন্টেশন এর সমস্যা – নিয়াসিনামাইড
৮) অ্যাকটিভ মিক্স ম্যাচ করবেন না
অ্যাকটিভ এর সাথে অন্য অ্যাকটিভ মিক্স করবেন না, যেমন –
- ভিটামিন সি এর সাথে রেটিনল ব্যবহার করা যাবে না
- AHA/BHA এর সাথে রেটিনল ব্যবহার করা যাবে না
উপসংহার
বর্তমান সময়ে কোরিয়ান স্কিনকেয়ার বাংলাদেশে এক নতুন জায়গা সৃষ্টি করে নিয়েছে। স্কিনে ঢেকে রাখার বদলে ভেতর থেকে সুস্থ করে তোলে। কোরিয়ান স্কিনকেয়ার জনপ্রিয় হবার পিছনে অনেক কারণ রয়েছে যেমন – লাইটওয়েট, জেন্টাল ফর্মুলা, ও দীর্ঘমেয়াদী ত্বককে রাখে উজ্জ্বল ও তারুণ্যদীপ্ত। কোরিয়ান স্কিনকেয়ার হলো একটি লাইফস্টাইল যার লক্ষ্য হলো পারফেক্ট নয় বরং সুস্বাস্থ্য ত্বক বজায় রাখা।



