মেকআপের জগতে ব্লাশ এমন একটি উপাদান যা কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই আপনার পুরো লুক পরিবর্তন করে দিতে পারে। আমরা অনেকেই মনে করি শুধুমাত্র ফাউন্ডেশন বা কনসিলার দিয়ে ফেস মেকআপ শেষ, যা ভুল। ব্লাশ আমাদের মেকআপে এনে দেয় প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা এবং তারুণ্যের ছোঁয়া। তবে এখানে সমস্যা হলো সব ব্লাশ আমাদের সবাইকে মানায় না।
আমাদের ত্বকের রঙের উপর নির্ভর করে ব্লাশ বাঁচাই করতে হয়। ত্বক যদি ফর্সা হয় তবে হালকা রঙ আপনাকে সুন্দর দেখাবে, আবার মাঝারি বা ডার্ক ত্বকে গাঢ় শেড বেশি মানাবে। সঠিক শেড বেছে নিতে না পারলে মেকআপ ভারী লাগতে পারে কিংবা মুখ মলিন দেখা যেতে পারে। তাই ত্বকের টোন অনুযায়ী ব্লাশ নির্বাচন করাই সবচেয়ে জরুরি। আমাদের আজকের ব্লগে আপনি জানতে পারবেন কোন ব্লাশটি হবে আপনার জন্য সঠিক।
ব্লাশের রঙ কীভাবে বাছাই করবেন
ব্লাশ বাঁচাই করার আগে আমাদের বুঝতে হবে, আমাদের ত্বকের টোন বা রঙ। ফর্সা ত্বকে সাধারণত সাধারণত কুল আন্ডারটোন বেশি থাকে, মাঝারি ও অলিভ টোনে নিউট্রাল বা ওয়ার্ম আন্ডারটোন দেখা যায়, আর ডার্ক ত্বকে ওয়ার্ম আন্ডারটোন বেশি কার্যকর হয়।
১) ফর্সা ত্বকের জন্য সেরা ব্লাশ শেড
যাদের ত্বক ফর্সা তাদের দ্রুতই অতিরিক্ত রঙ শোষণ করে নেয়, তাই হালকা ও নরম শেড বেশি মানানসই হয়।
-
বেবি পিঙ্ক ব্লাশ –
ব্লাশের এই শেডটি আপনার মুখে নিয়ে আসে নরম ও ফ্রেশ ভাব। এটি ফর্সা ত্বকের গালে একটা হালকা রক্তিম আভা দেয়, যা ফর্সা ত্বকে অত্যন্ত স্বাভাবিক দেখায়।
-
ফ্যাকাশে পিচ ব্লাশ –
এর পিচ টোন গালে উষ্ণতা যোগ করে এবং ফর্সা ত্বককে ফ্ল্যাট দেখানো থেকে রক্ষা করে।
-
সফট রোজ ব্লাশ –
এটি দিনে বা রাতে যে কোনো লুকের সাথে মানিয়ে যায়। রোজ শেড ফর্সা ত্বকে একটা সুন্দর লুক দেয়।
-
উজ্জ্বল কোরাল ব্লাশ –
গ্রীষ্মকালের জন্য এটি একটি আদর্শ ব্লাশ। এটি ত্বকে উজ্জ্বলতা ও সতেজতার একটি ছোঁয়া দেয়।
২) মাঝারি (Medium) ত্বকের জন্য সেরা ব্লাশ শেড
মাঝারি ত্বকে রঙের বহুমুখিতা থাকে, তাই অনেক শেড সুন্দরভাবে ফুটে ওঠে।
-
সফট বেরি ব্লাশ –
এটি মাঝারি ত্বকে দারুণ গভীরতা আনে। বিশেষ করে সন্ধ্যার কোনো লুকের জন্য খুবই ভালো লাগে।
-
হালকা টেরাকোটা ব্লাশ –
এটি একটি ওয়ার্ম শেড যা মাঝারি ত্বকে সাধারণ একটি “sunkissed effect” নিয়ে আসে, যা দেখতে খুবই দারুণ লাগে।
-
সুইট পিচ ব্লাশ –
এটি পিচ সেডের একটি ব্লাশ যা আমাদের ত্বককে বেশ সতেজ ও উজ্জ্বল দেখায়। এই শেডটি যে-কোনো ক্যাজুয়াল এবং ডে-টাইম লুকের জন্য পারফেক্ট।
৩) অলিভ টোন ত্বকের জন্য সেরা ব্লাশ শেড
এই ত্বকের রঙে স্বাভাবিকভাবেই একটু গোল্ডেন বা সবুজাভ আন্ডারটোন থাকে। এই ত্বকের জন্য bold এবং উষ্ণ শেড বেশি মানানসই।
-
বোল্ড পিঙ্ক ব্লাশ –
এই শেড অলিভ বা জলপাই রঙের ত্বককে আরও উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত করে তোলে। যে-কোনো রাতের পার্টি লুক বা গ্ল্যাম লুকের জন্য এটি ভালো একটি ব্লাশ।
-
গোল্ড-পিঙ্ক ব্লাশ –
এই ব্লাশে থাকা গোল্ডেন শিমার যা অলিভ টোনে প্রাকৃতিক ব্রোঞ্জড গ্লো আনে।
-
আর্থি পিঙ্ক ব্লাশ –
এই ব্লাশ শেডটি আমাদের দৈনন্দিন লুকের জন্য উপযুক্ত। এটি অলিভ টোনে একটা হালকা ন্যাচারাল গ্লো এর নিয়ে আসে। দেখতে মনে হয় ত্বক যেন সূর্যের আলোয় নরম লালচে আভা নিয়েছে।
৪) ডার্ক/গভীর ত্বকের জন্য সেরা ব্লাশ শেড
ডার্ক টোনের ত্বক বোল্ড শেডকে খুব সুন্দরভাবে বহন করে। তাই গাঢ় রঙ বেছে নিলে আপনার ত্বক আরও আকর্ষণীয় ও প্রাণবন্ত দেখাবে।
-
ডিপ পার্পল ব্লাশ –
ইউনিক এবং ড্রামাটিক শেড যা ডার্ক ত্বকে অসাধারণ মানায়। বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য আদর্শ।
-
স্পাইসড পিঙ্ক ব্লাশ –
আপনার ত্বকে উষ্ণ আভা যোগ করে এবং মুখে এক ধরনের natural glow আনে।
-
রোজ-টিন্টেড ব্লাশ –
এটি versatile, ডার্ক ত্বকে দিনে বা রাতে যে কোনো মেকআপের সাথে মানিয়ে যায়।
সবচেয়ে ইউনিভার্সাল ব্লাশ কালার কী?
যদিও ব্লাশ ত্বকের টোন অনুযায়ী আলাদা আলাদা বেছে নিতে হয়, তবে পিচি-পিঙ্ক ব্লাশ একটি ইউনিভার্সাল কালার। এই শেড সব ধরনের ত্বকে সমানভাবে মানায় এবং খুব ন্যাচারাল লুক দেয়।